Bcs Preparetion
হল বাংলা সাহিত্যে মহাকবি কতজন ও কে কে? আসুন জেনে নেওয়া যাক বাংলা সাহিত্যে মহাকবি ৮ জন। যথাঃ ১) মাইকেল মধুসুদন দত্ত। মেঘনাথ বধ কাব্য (১৮৬১) ২) হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যয়। বৃত্রসংহার (১৮৭৫) ৩) নবীনচন্দ্র সেন। রৈবতক(১৮৭৫), করুক্ষেত্র (১৮৯৩), প্রভাস (১৮৯৬) ৪) কায়কোবাদ। মহাশ্মাশান(১৯০৪) ৫) ইসমাইল হোসেন সিরাজী। স্পেন বিজয় কাব্য(১৯১৪) ৬) আনন্দচন্দ্র মিত্র। (হেলেনা কাব্য) ৭) হামিদ আলী। (সোহ্রাববধ কাব্য) ৮) যোগীন্দ্রনাথ বসু। (পৃথ্বীরাজ) যিনি মহাকাব্য রচনা করেন, তিনি মহাকবি নামে পরিচিতি পেয়ে থাকেন। মহাকাব্য শ্রবকাব্যের একটি অংশবিশেষ। যে কাব্যে কোন দেবতা বা অসাধারণ গুণসম্পন্ন পুরুষের কিংবা একবংশোদ্ভব বহু নৃপতি বা রাজা-বাদশাহর বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়, তা মহাকাব্য নামে পরিচিত। মহাকাব্য হচ্ছে দীর্ঘ ও বিস্তৃত কবিতা বিশেষ। সাধারণতঃ দেশ কিংবা সংস্কৃতির বীরত্ব গাঁথা এবং ঘটনাক্রমের বিস্তৃত বিবরণ এতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়। সুপ্রাচীনকালে মুখে মুখে প্রচলিত কবিতাসমগ্রও মহাকাব্যের মর্যাদা পেয়েছে। মহাকাব্যে প্রাকৃতিক বিবিধ দৃশ্যমালা ও পরিবর্তন বর্ণিত থাকে এবং এতে কমপক্ষে আটটি কিংবা ততোধিক সর্গ বা ভাগ থাকে। যথাঃ রামায়ণ, মহাভারত, মেঘনাদবধ ইত্যাদি। অল্প আয়তন ও ক্ষুদ্রাকৃতি খণ্ডকাব্যের (যেমনঃ মেঘদূত, সীতার বনবাস, শকুন্তলা ইত্যাদি) চেয়ে মহাকাব্যের প্রেক্ষাপট বিস্তৃত ও ব্যাপক। প্রসঙ্গক্রমে এতে বিভিন্ন ছন্দে প্রকৃতি, যুদ্ধবিগ্রহ, স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল প্রভৃতির বর্ণনাও থাকতে পারে। এর ভাষা ওজস্বী এবং গাম্ভীর্যব্যঞ্জক হবে। নায়কের জয় বা আত্ম-প্রতিষ্ঠার মধ্যে মহাকাব্যের সমাপ্তি হবে। কারণ, সাধারণতঃ এতে ট্র্যাজিডির স্থান নাই। পাশ্চাত্য আলঙ্কারিক এরিস্টটলের মতে, “মহাকাব্য আদি, মধ্য ও অন্ত-সমন্বিত বর্ণনাত্মক কাব্য। এতে বিশিষ্ট কোন নায়কের জীবন-কাহিনী অখণ্ডরূপে একই বীরোচিত ছন্দের সাহায্যে কীর্তিত হয়।” এই জাতীয় কাব্যাদর্শ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন – “কালে কালে একটি সমগ্র জাতি যে কাব্যকে একজন কবির কবিত্বশক্তি আশ্রয় করিয়া রচনা করিয়া তুলিয়াছে, তাহাকেই যথার্থ মহাকাব্য বলা যায়।”